আস্তে আস্তে লাঠিটা হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো রহিম বুড়ো।আজকের খাবারটা ভগবান জুটিয়েছে রাম-সীতার মন্দিরে আর কালকের টা জুটেছিলো খুদাবক্স মসজিদের বারান্দায়।নেহাতই মন্দির মসজিদ গুলো আছে বলে দুপুরের খাবারটা জুটে যায়। রাতে কিছু না হলেও চলে, উসমান মোল্লার পুকুরের পানি খুব মিষ্টি।
প্রথম প্রথম মন্দিরের দরজায় আসতে বাধো বাধো লাগতো। কিন্তু প্রথম যেদিন প্রচন্ড খিদে আর তেষ্টায় মাথা ঘুরে গিয়ে মন্দিরের দেওয়ালটা দুহাতে আঁকড়ে ধরেছিলো, মন্দিরের পুরোহিত ই তাকে তখন ধরে বারান্দায় বসিয়ে দেয়। পাতায় করে রাম-সীতার প্রসাদ আর মাটির গ্লাশে জল এনে দিয়েছিলো। সেদিন সে অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলো রাম-সীতার প্রান হীন পাথরের মূর্তির দিকে। অজান্তেই চোখের দুফোঁটা জল সাদা ফুলের মতো মন্দিরের বারান্দায় গড়িয়ে পরেছিলো।
পীরজাদা রা বলে হিন্দুরা পুতুল পুজো করে। তাদের দেবতায় প্রান নেই তাহলে এই দুমুঠো অন্নের ব্যবস্থা কে করে দিলো? মানুষের তো মনুষ্যত্ব নেই, তাদের দরজায় গিয়ে তো তাকে ফিরে আসতে হয়। খাবার তো জোটেই না জোটে শুধু অহেতুক অপমান আর তিরস্কার। সে কপালে কালো দাগ ওয়ালাই হোক অথবা কপালে লাল গেরুয়া তিলক কাটা, কেউই তো তাকে মানুষের সম্মানটুকুও দেয়না। তাহলে এই পাথরের মূর্তির সামনে ঠান্ডা পাথরের বারান্দায় তার সামনে খাবার কে এনে দিলো?
(গল্প নয়, একটা টুকরো। যদি চান গল্প বানিয়ে নিন। পুরো একটা জীবনের গল্প)।
#3rdeyemedia